দুর্দান্ত সন্তু – ২য় পর্ব

ছোট থেকেই চোর পুলিশ, কুমির ডাঙ্গা, লুকোচুরি এসব সন্তুর কাছে গল্পের মত। দুপুরে খাবার পর যখন পাড়ার ছেলেরা সবাই খেলতে যায়, মা তখন সন্তু কে কোলের কাছে নিয়ে একরকম জোর করেই ঘুমপাড়িয়ে দেয়। সন্তুর এতে ভীষণ আপত্তি, আরে বাবা সবার মা তো খেলতে দেয়, ওকে যে কেন মা এত আগলে রাখে!

অগত্যা দিদিভাই ই ভরসা। দিদিভাই আর সন্তু একদম পিঠোপিঠি। ওরা দুজন পুতুল খেলে। পুতুল কি শাড়িপরবে, কি রান্না হবে, ঠিক করে দিদিভাই। আর সন্তু দিদিভাই এর হেল্পার। কোন পাতাটা তুলে আনতে হবে, আজ কতটা বালির ভাত হবে, পুতুলের শাড়ির দর্জি , এসব দায়িত্ব সন্তুর। দিদিভাই বলল ভাই এই কাপড়টা কেটে আনতো, পুতুল সোনা কে স্নান করে পরাতে হবে।শোনা মাত্র তিড়িং করে লাফিয়ে ছুটল রান্না ঘরের দিকে। সেখানে ঠাম্মা কে বলবে বটি দিয়ে কাপড় দু-ভাগে ভাগ করে দিতে।একছুট্টে খেলার ঘর থেকে বেরিয়ে , উঠোন পেরিয়ে রান্না ঘর। কিন্তু ওমা ঠাম্মি কোথায়!

উনুনের পাশে বটিটা খাড়া করা। কি ভারী রে বাবা, কোন রকমে দার করিয়ে সন্তু বিজ্ঞের মত বসলো বটির উপর। কি গুরু দায়িত্ব, কাটতে হবে একদম সমান করে।ভীষণ রকম সাবধানতা অবলম্বন করে, ঠিক দুই ভাগে কাটা হলো কাপড়টা এবং তার থেকে বেরিয়ে এলো দুটো ছো্ট শাড়ি। ছুট্টে গেল দিদিভাই এর কাছে। কাপড়ের টুকরোটা হাতে দিতেই দিদিভাই চিৎকার করে উঠল, একি এত রক্ত কোথা থেকে এলো। ভাই,পুতুলের কাপড় কাটতে গিয়ে নিজের হাত কেটে ফেলেছে অথচ হুস নেই। এ কেমন ছেলে। তারপর ছুটো ছুটি, ডাক্তার বদ্দি, হাতে ব্যান্ডেজ, সন্তুকে কোলে নিয়ে মায়ের কত অল্হাদ, ছোট্ট সন্তু তখনও পুতুল নিয়ে ব্যস্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *