Dhamsa Tribal Restaurant

কয়েকদিন ধরে ফেসবুক খুললেই দেখছি কেউনা কেউ ধামসা গেছে।
নিউটাউনে অবস্থিত ইকোপার্কের ৬নং গেটের কাছে রয়েছে এই ধামসা রেস্তরাটি। ফেসবুক থেকেই জানলাম এখানে পাব একদম অন্য ধরণের আম্বিএন্স, চারপাশে সবুজের সমারোহ, পাখির ডাক, মন ভালো করা গ্রামবাংলার গন্ধ।সব মিলিয়ে কোলকাতার বুকে একটুকরো আদিবাসী গ্রাম।সর্বোপরি এখানে খাবারের দাম বেশ কম। সপ্তাহের শুরুতেই ঠিক করলাম নেক্সট উইকেনডে এই ফেসবুক খ্যাত রেস্তোরাঁ যাব এবং জমিয়ে কালো চালের ভাত সহযোগে বাঁশ পোড়া মটন খাবো।
ধীরে ধীরে দিন যায়, রোববার ঘুম থেকে উঠে চা খেয়ে, বরকে ব্রেকফাস্টে কি খাবে জিজ্ঞাসা করতে তিনি জানালেন, একদম হাল্কা কিছু খাবেন, কারন আজ ধামসায় গিয়ে তাকে অনেক কিছু খেতে হবে তাই পেটে জায়গা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
বেলা ১২ টায় ঠাঠা রদ্দুর মাথায় নিয়ে আমরা বেরলাম যাদবপুর থেকে, যাব সুদুর নিউটাউন(প্রায় ২০ কিমি)। রাস্তায় রোদ কমে শুরু হল বৃষ্টি, বাইক থামিয়ে আমরা রেনকোট গায়ে দিয়ে আবার এগিয়ে চললাম। নিউটাউন এ পৌঁছে দেখি আবার রোদ্দুর।

বেলা ১২.৪৫ নাগাদ আমরা পৌঁছলাম ধামসার ( Dhamsa Tribal Kitchen) কাছে। পৌঁছে দেখি একি! কাতারে কাতারে মানুষ, সবাই কি একটা আশ্চর্য জিনিস দেখতে এসেছে (আমরাও একি দলে), প্রায় হাফ কিমি দূরে পারকিং, সেখান থেকে হেঁটে এসে যখন ধামসার একদম সামনে এলাম তখন বাজে ১টা।কোথায় নিস্তব্ধ গ্রাম, কোথায় আদিবাসী, শুধুই মানুষের চেঁচামেচি। এদিকে বেশ খিদে খিদে পাচ্ছে, কিন্তু পেলে কি হবে এখানে একটি খাতায় প্রথমে নাম লেখাতে হয়। নাম যিনি লিখছেন ভীর ঠেলে সেই ভদ্রমহিলার কাছে গিয়ে যা বুঝলাম তা হল, এখনো প্রায় ৪০০ লোক লাইনে রয়েছেন, কিন্তু আজকের মত আর বুকিং নেওয়া হবেনা। ৫.৩০ অব্দি লাঞ্চ প্রভাইড করা হয় তার পর কেবল স্নেক্স। প্রত্যেকে মর্মাহত হয়ে ইতিউতি ঘুরতে লাগলো, কেউ কেউ ধামসার প্রাচীরে বসে পা দুলিয়ে ৫.৩০ এর স্নেক্স এর অপেক্ষায় বসে পরলো। আমার কর্তার মুখ শুকিয়ে চোখ ছল ছল অবস্থা।
- Time: 12 pm – 8 pm.
- Location: Near Gate No. 6
- Phone No: +91 8017432636 / 9477430668
- Email: frontoffice@ecoparknewtown.com
- Menu : [ Dhamsa menu ]

Cafe Ekante

মাথায় এলো পাশেই রয়েছে “ক্যাফে একান্তে”। বিন্দু মাত্র সময় অপচয় না করে দৌড়লাম সেই দিকে। পৌঁছে যা বুঝলাম ধামসা থেকে মুখ ঝামটা খেয়ে আমাদের মত অনেকেই এখানে এসে খুদা নিবারণে ব্রত হয়েছেন। আরও ৩০ মিনিট অপেক্ষার পর আমরা টেবিল পেলাম।





অর্ডার করা হল
- আম পোরার শরবত (৮৯/-)
- ভেটকি ফিশ ফ্রাই (২৮৯/-)
- বরিশালের ইলিশ টিকিয়া (২৪৯/-)
- ফরিদাবাদ মুরগ পোলাউ (২২৯/-)
- সালাড (৭৯/-)
- ক্যাফে একান্তে স্পেশাল মটন কষা (৩৭৯/-)
- আর শেষ পাতে মালদার কুলফি (১১৯/-)
খেতে খেতে খেয়াল হল খিদের চোটে আমরা লক্ষ্যই করিনি ক্যাফে একান্তের চারপাশ টা এতো সুন্দর।
একদম লেকের ধারে সাজানো বাগান, ডক, বোট হাউস, মিষ্টি ঠাণ্ডা বাতাস, সূর্যমুখী, রঙ্গন, কাঠটগর, ঝুমকোলতা, মাধবীলতার মেলা। ছবি তোলা, বা একান্তে দু-দণ্ড সময় কাটানোর জন্য যথার্থ। ক্যাফে একান্তের রাত্রি জাপনের জন্য রয়েছে কটেজও (৫০০০-৬০০০ টাকা প্রতি রাত্রি)।


খাওয়া শেষ করে আশপাশটা ভালো করে ঘুরে দেখে কিছু ছবি তুলে আমরা রউনা দিলাম বাড়ির দিকে। কর্তা মশাই এর মুখে হাসি দেখে বুঝলাম সানডে সর্টেড।