
বিজ্ঞান থাকলে সেখানে কল্পনা আসেনা। কিছু সময় আগে আড্ডায় বন্ধুদের থেকে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শুনছিলাম,নিজেরটাও বলেছি।ছাদে অনেক রাতে ঐ গুড়ুগুড়ু আওয়াজ সত্যিই একটা ভয়ের কারণ। তারপর যা দেখলাম প্রায় সকলেই সে গুড়গুড় আওয়াজ শুনেছে। ভূতপ্রেত বা বেড়াল,ছুঁচো,ধেড়ে ইঁদুর সবই এসে গেছে সে গল্পে। এবার আসতে বাকি আসল কারণটা।
সকলের মত আমিও ব্যাপার তা কোনো এক ভুতের কান্ড ভেবেই ফেলেছি সে সময় কোনো এক জনের কাছে জানলাম বেশ পুরনো বাড়ি গুলোর ছাদ কনক্রীটের হতনা।সুড়কি চুনের মিশ্রণের সংগে চিটেগুড়,খয়ের এবং আরো কিছু জিনিষের মর্টার মেখে কাঠের পাটা দিয়ে পিটিয়ে তৈরী হত এই ছাদ।একে পেটা ছাদ বা জলছাদ বলা হত। এই জলছাদ কথাটা আমার ভীষণ পরিচিত। কারণ আমার বাড়ির ছাদের ৭৫% ছাদে একটি বেশ পুরু সামান্য লালচে রঙের। আস্তরণ রয়েছে। যার নাম ছোট থেকেই শুনেছি জলছাদ। আর বাকি টায় এ বস্তুটি নেই তাই জলছাদ বিহীন ঘর গুলো গরম কালে বেশ কষ্ট দায়ক হয়ে থাকতো। এই জলছাদের মধ্যেই লুকনো রয়েছে আসল কারণ। সারাদিন রোদে গরম হয়ে যেত এই ছাদ।সেই তাপ চুঁইয়ে নামে নীচের দিকে। সূর্য ডুবে গেলে ছাদের পিঠ ঠাণ্ডা হতে হতে গভীর রাতে আরো ঠাণ্ডা হয়ে যেত।এবার মজাটা শুরু। চুনসুড়কির মধ্যে থাকা বায়ুকণা উত্তাপের ফলে দুপুর বেলায় ছাদের আস্তানার মায়া কাটিয়ে বেরিয়ে গেছিল,এখন আবার তাদের সেই শূন্যস্থান ভরার পালা।তারা দ্রুতগতিতে আবার ছাদের অসংখ্য ছিদ্রের ভেতরে ঢুকে পড়ে।এদিকে ছাদের তলের একটু নীচের দিকে তখনো যেটুকু বায়ু আটকে ছিল এবং তারা যেহেতু অপেক্ষাকৃত উষ্ণ তখন তারা ওপরদিকে দ্রুত উঠে ওই ঠান্ডা হাওয়াকে জায়গা করে দেয়,তখনই ওই ঠাণ্ডা গরমের সংঘাতের ফলে একটা মৃদু কম্পন হয়।আর তা ছাদের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।একটু পরে স্বাভাবিক ভাবেই থেমে যায়।আর ছাদে গিয়ে আমরা কাউকেই দেখিনা।