জলছবি

আজ অফিস থেকে বেরোতে একটু বেশিই দেরি হলো রাই এর,বাস টা বোধহয় আজ আর পাওয়া যাবেনা।ভাবতে ভাবতে পা চালিয়ে বাস স্ট্যান্ড এ এসে কল করলো মা কে,না না আর দেরি করা যাবেনা,উবের পুল বুক করে নিলো তাড়াতাড়ি। পুলের সুবিধে বলতে ওই সস্তায় পুষ্টিকর জার্নি,অচেনা সহযাত্রী দের সাথে ক্যাব শেয়ার করতে হয় ঠিকই তবুও বেশ লাগে ।

ব্যেক সিট এর জানলার ধারে বসে হেড ফোনটা কানে গুঁজে রাই গান শুনছে আর তাকিয়ে আছে বাইরের আলোকিত কলকাতার বড় বড় ঝাঁ চকচকে বিল্ডিং আর হোডিং এর দিকে ।কিছুক্ষন পর আরো দুটো পিক আপ তারপর সোজা হাজরা। ব্যাগ থেকে রুমাল বের করতে গিয়ে হটাৎ বাম পাশে চোখ যেতেই চমকে উঠলো রাই। তারপর সামলে নিলো, না এক ঝটকায় পাশে বসা ছেলেটি কে শুভ মনে হতেই একটা বিদ্যুৎ শিহরণ আলতো ছোয়ায় হাত বুলিয়ে গেল রাই এর শরীর জুড়ে। হাসি পেলো, এরকম টা আগে কখনো হয়নি, শুভর সাথে প্রেম শুরুর সেই প্রথম দিকে এরকম বুক ধুকপুক ব্যাপার টা ছিল, আজ এতদিন পর সেসব কোথায় মিলিয়ে গেছে।

একবার যদি ওকে বলা যেত, একবার খুব ইচ্ছে হচ্ছে ওকে জানাতে, খুব ইচ্ছে করছে একটা ফোন করতে, ২ টো মিনিট কথা বলতে, অনেক সাহস জোগাড় করে আনলক করলো ফোনটা, তারপর রাই এর আঙুলগুলো নম্বর গুলো ছুঁয়ে গেল আনমনে,না ওর ফোন নম্বর টা আজও ভোলা যায়নি,ফোনের স্ক্রিন এ ভেসে উঠলো কোনো এক বছরের অষ্টমীর সকালে তোলা লাল শাড়ি আর ঘিয়ে পাঞ্জাবির এক মিষ্টি স্মৃতি,আর কানে বাজলো কলার টিউন “আভিনা যাও ছোর কে, কি দিল আভি ভরা নহি”।।

— সুপর্ণা ঘোষ (১৮ নভেম্বের ২০১৭)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *