চা আর মশলা মুড়ি

আমার দিদার বাড়ি যে গ্রামে, তার নাম টেয়া। ছোট থেকে দেখেছি দিদার বাড়িতে রান্না ঘরের দাওয়ায় মাটির উনুনে, পোড়ামাটির পাতিলে (হাঁড়ি), ঝাঁটা দিয়ে শেফালী মাসি মুড়ি ভাজত। প্রতিবার দিদার বাড়ি থেকে কেউ এলে বা আমরা গেলে দিদা, বাড়িতে ভাজা মুড়ি মা কে দিয়ে পাঠাত। সে মুড়ি আবার অনেক রকম, কখনো লাল চালের, কখন সেদ্ধ চালের আবার কখনো কেনা চালের। ঘরের চালের মুড়ি হতো মোটা মোটা, আর একটা অদ্ভুত সুগন্ধ তাতে। মা বেশ করে সর্ষের তেল দিয়ে মাখত। মুড়ির নিজস্ব গন্ধ আর ওই ঝাঁঝালো সর্ষের তেলের গন্ধ মিশে সে এক জব্বর ব্যাপার।

এখন আর দিদা ও নেই, সেসব পাট কবেই চুকে-বুকে গেছে। কিন্তু এই মুড়ি পাঠানোর রেওয়াজটা আমার মা ছাড়তে পারেনি। আমার বাড়িতে মুড়ি ভাজার কোন রকম বেবস্থা নেই। তবুও মা দোকান থেকে কিনে বাবা কে দিয়ে কখন বা, মা নিজে সাথে করে নিয়ে আসে। মা এর দাবি, কলকাতায় ভালো মুড়ি পাওয়া যেতেই পারেনা।

তবে বেশ করে তেল মাখিয়ে পেঁয়াজ লঙ্কা কুচি,চানাচুর,আর সামান্য বিট নুন। সাথে এক কাপ গরম চা। সন্ধে বেলার ঠান্ডা হওয়া আর হালকা গান।উফফ স্বর্গ।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *