কথোপকথন -পূর্ণেন্দু পত্রী


-তোমার মধ্যে অনন্তকাল বসবাসের ইচ্ছে,
তোমার মধ্যেই জমিজমা ঘরবাড়ি।
আপাতত একতলা..
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?

-একতলা আমার এক বিন্দু পছন্দ নয়,
সকাল সন্ধ্যে চাঁদের সাথে গপ্পো গুজব;
তেমন উঁচু নাহলে আবার বাড়ি নাকি?

-আচ্ছা তাই হবে।
চাঁদের গা ছুঁয়ে বাড়ি,
রহস্য উপন্যাসের
মতো ঘোরানো প্যাচানো সিঁড়ি!
বাঁকে বাঁকে সোনালী সাজানো স্বপ্নদৃশ্য।
শিং সমেত মায়া হরিণের মুণ্ডু …
হাসছো কেন ? বলো হাসছো কেন?

-কাটা হরিণ দেয়ালে ঝুলবে, অসহ্য।
হরিণ থাকবে বনে, বন থাকবে আমাদের খাট পালঙ্কের চারধারে!
খাট পালঙ্কের নিচে ছোট্ট
একটি পাহাড়,
পাহাড়ের পেটচিরে ঝর্ণা।

-আচ্ছা তাই হবে।
পাহাড় চিরে ঝর্ণা, ঝর্ণার
উপরে কাশ্মিরী কার্পেট..
সিলিং এ রাজস্থানী-ঝাড়ঝলে ঝাঝরীর মতো উপুর করা।
জানালার গায়ে মেঘ, মেঘের
গায়ে ফুরফুরে আদ্দির
পাঞ্জাবী,
পাঞ্জাবীর গায়ে লক্ষ্ণই চিকনের কাজ..
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?

-মেঘ রোজ রোজ পাঞ্জাবী পড়বে কেন?
এক একদিন পরবে বালুচরী কিংবা
খাটাও এর পাতলা প্রিন্ট,
মাথায় বাগান-খোপা,
খোপায় হীরের প্রজাপতি..

-আচ্ছা তাই হবে।
মেঘ সাজবে জরি পাড় শাড়িতে
আর তখনই নহবতখানার সানাই এর জয়জয়ন্তী,
আর তখনই অরণ্যের
রন্ধ্রে রন্ধ্রে বুনো জানোয়ারের
হাকডাক।
খাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য
জেগে উঠবে জলপ্রপাত,
শিকারের জন্য তীর ধনুক,
দামামা দুন্দুভি…
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?

-তুমি এমন ভাবে বলছো;
যেন ভালবাসা মানে সাপে নেউলে ভয়াবহ একটা যুদ্ধ।
ভয় লাগছে..
অন্য গল্প বলো ।।

  • আবৃতিঃ সুপর্ণা ঘোষ
  • কবিতাঃ পূর্ণেন্দু পত্রী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *